দিডিজি ডেস্কঃ দেশের উচ্চ সংক্রমণশীল ১৩ জেলার মানুষকে বাঁচাতে তাদের যাতায়াতসহ সব ক্ষেত্রে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ চায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তারা ওই ১৩ জেলাকে ৩টি ক্লাস্টারে ভাগ করেছে।
এ লক্ষ্যে তারা একটি প্রস্তাব চূড়ান্ত করেছে, যা আজকালের মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এসব জেলায় কঠোর লকডাউন দেওয়ার সুপারিশ করছে সংস্থাটি।
দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার লক্ষণ নেই। ঈদের পর থেকেই বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃত্যু। বিশেষ করে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে সীমান্তবর্তী জেলাগুলো। সংক্রমণ ও মৃত্যু ঠেকাতে বেশ কয়েকটি জেলায় লকডাউন জারি করা হয়েছে। তবুও স্বস্তি পাচ্ছে না সরকার।
এরই মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা। সারাদেশে ৫৮ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে রাজশাহী বিভাগে মারা যাওয়া ৫২ জনের মধ্যে শুধু রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই মারা গেছেন ৫০ জন।
এমন অবস্থায় দেশের উচ্চ সংক্রমণশীল ১৩ জেলার মানুষকে বাঁচাতে তাদের যাতায়াতসহ সব ক্ষেত্রে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ চায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তারা ওই ১৩ জেলাকে ৩টি ক্লাস্টারে ভাগ করেছে।
এ লক্ষ্যে তারা একটি প্রস্তাব চূড়ান্ত করেছে, যা আজকালের মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এসব জেলায় কঠোর লকডাউন দেওয়ার সুপারিশ করছে সংস্থাটি।
সম্প্রতি অধিদপ্তরের একজন অতিরিক্ত মহাপরিচালকের নেতৃত্বে একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন দল সীমান্তবর্তী জেলা পরিদর্শন করে সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে এসব জেলায় লকডাউনের সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত নেয়।
সীমান্ত জেলা ঘুরে আসা একাধিক সদস্যে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, প্রথম ক্লাস্টারে রয়েছে চারটি জেলা-কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও ও দিনাজপুর। এ চারটি জেলায় সংক্রমণের হার ৩০ শতাংশের বেশি।
দ্বিতীয় ক্লাস্টারে রয়েছে চারটি জেলা। এগুলো হলো- চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর ও নওগাঁ। এই জেলাগুলোয় শনাক্তের হার ১০ শতাংশের উপরে। তৃতীয় ক্লাস্টারে রয়েছে ৫টি জেলা।
এগুলো হলো- সাতক্ষীরা, যশোর, খুলনা, চুয়াডাঙ্গা ও পিরোজপুর। এসব জেলায় শনাক্তের হার ৫ থেকে ১০ শতাংশ।
অধিদপ্তর বলছে, ৪ জুন থেকে ১০ জুন পর্যন্ত এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ২২টি জেলা অধিকতর উচ্চ সংক্রমিত। সেখানে নমুনা পরীক্ষায় পজিটিভের হার ১০-এর সমান বা বেশি।
আবার ৭ জেলায় শনাক্তের হার ১০ শতাংশ বা এর বেশি। সেগুলো হলো : রাজশাহী, খুলনা, যশোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সাতক্ষীরা, কক্সবাজার ও ফরিদপুর।
অধিদপ্তরের তথ্যে আরও দেখা গেছে, সংক্রমণশীল এলাকাগুলোর হাসপাতালে শতভাগ শয্যায় কোভিড-১৯ রোগী ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এমনকি আইসিইউ (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) শয্যার প্রায় শতভাগ রোগীতে পূর্ণ।
এর মধ্যে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৫৩টি কোভিড শয্যা এবং ১৮টি আইসিইউ শয্যা রয়েছে। এই হাসপাতালের শতভাগ শয্যায় রোগী চিকিৎসাধীন। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কোভিড শয্যা ৮০টি এবং আইসিইউ শয্যা ১০টির একটিও ফাঁকা নেই।
যশোরের ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে কোভিড ৪০টি শয্যায় রোগী আছেন। তবে আইসিইউর ৩টি শয্যার একটি ফাঁকা আছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ ২৫০ শয্যার হাসপাতালে ৫০টি কোভিড শয্যার সবই রোগীতে পূর্ণ। এই হাসপাতালে কোনো আইসিইউ শয্যা নেই।
এদিকে, দিনাজপুর সদরে মঙ্গলবার থেকে এক সপ্তাহের লকডাউন শুরু হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২১ জুন পর্যন্ত লকডাউন চলাকালে সদর উপজেলার কেউ ঘর থেকে বের হতে পারবেন না।
মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, কার, মাইক্রোবাসসহ সব রকমের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। ওষুধ ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ছাড়া বন্ধ থাকবে সব দোকান।